কালোটাকা সাদা করার পথ বন্ধ হচ্ছে : জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
নিউজ ডেস্ক
কালোটাকা সাদা করার পথ বন্ধ হচ্ছে : জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
কালোটাকার মালিকরা ১৫ শতাংশ কর দিয়ে লুকানো বা নগদ অর্থ আর আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করতে পারবেন না। অবশ্য জমি-ফ্ল্যাট-অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে আগের মতোই সুযোগ থাকছে। মূলত দুর্নীতিবাজ ও ব্যাংক লুটেরারা যাতে আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে যেতে না পারেন, সেজন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানায়, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দুর্নীতিবাজ ও ব্যাংক লুটেরারা আয়কর আইনের এ ধারার সুযোগ নিয়ে কালোটাকা ও লুকানো অর্থ বৈধ করে শাস্তি এড়াতে পারে-এই আশঙ্কা থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ কালোটাকা সাদা করার বিধান বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর আলোকে নগদ অর্থ প্রদর্শনের সুযোগ বাতিলের বিষয়ে এনবিআর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী সপ্তাহে অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টার অনুমোদনের জন্য সারসংক্ষেপ পাঠানো হবে। অনুমোদন পেলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
আয়কর আইনে দুই পদ্ধতিতে কালোটাকা প্রদর্শনের সুযোগ রয়েছে। প্রথমত, জমি-ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে মৌজাভিত্তিক নির্দিষ্ট হারে আয়কর পরিশোধ সাপেক্ষে অপ্রদর্শিত আয়ে কেনা জমি-ফ্ল্যাট বৈধ করা যায়।
দ্বিতীয়ত, ১৫ শতাংশ হারে আয়কর দিয়ে সিকিউরিটিজ, নগদ অর্থ, ব্যাংকে রক্ষিত আমানত প্রদর্শনের সুযোগ রয়েছে। আগে হাই-টেক পার্ক বা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ রাখা হলেও চলতি অর্থবছরের বাজেটে সেই সুযোগ বাতিল করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ১০ শতাংশ কর দিয়ে আয়কর রিটার্নে অপ্রদর্শিত নগদ অর্থ, ব্যাংক আমানত প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বর্গমিটারপ্রতি নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে প্লট-ফ্ল্যাট প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তখন ১১ হাজার ৮৫৯ জন করদাতা কালোটাকা সাদা করেন।
কালোটাকার ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, স্বাধীনতার পর থেকে নানাভাবেই কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। মূলত কালোটাকাকে অর্থনীতির মূলধারায় আনতে এ সুযোগ দেওয়া হয়। ৭১-৭৫ সাল পর্যন্ত ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা সাদা করা হয়েছে। সেখান থেকে তৎকালীন সরকার মাত্র ১৯ লাখ টাকা আয়কর পায়। পরে এ সুবিধা বহাল থাকায় প্রতিবছরই কালোটাকা সাদা করার অঙ্ক বাড়তে থাকে।
১৯৭৬-৮০ সাল পর্যন্ত ৫০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা সাদা করা হয়, সরকার আয়কর পায় ৮১ লাখ টাকা। ১৯৮১-৯০ পর্যন্ত ৪৫ কোটি টাকা সাদা হয়, সরকার আয়কর পায় ৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। ’৯১-৯৬ পর্যন্ত ১৫০ কোটি টাকা সাদা হয়, আয়কর আদায় হয় ১৫ কোটি টাকা। এরপর ধারাবাহিকভাবে কালোটাকার অঙ্ক বাড়তে থাকে।
১৯৯৭-২০০০ সাল পর্যন্ত একলাফে ৯৫০ কোটি টাকা সাদা হয়, আয়কর আদায় হয় ১৪১ কোটি টাকা। পরের ৭ বছর অর্থাৎ ২০০১-০৭ পর্যন্ত ৮২৭ কোটি, ২০০৭-০৯ পর্যন্ত ১ হাজার ৬৮২ কোটি, ২০০৯-১৩ পর্যন্ত ১ হাজার ৮০৫ কোটি এবং ২০১৩-২০ পর্যন্ত ১১ হাজার ১০৭ কোটি টাকা মূলধারার অর্থনীতিতে প্রবেশ করে।
এ থেকে সরকার রাজস্ব পায় যথাক্রমে ১০২ কোটি, ৯১১ কোটি, ২৩০ কোটি এবং ১ হাজার ৭৩ কোটি টাকা। শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের মোট ৫০টি দেশে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রয়েছে।
- জিন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
- বাংলাদেশকে প্রায় ১০০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তার ঘোষণা বিশ্বব্যাংকের
- হাইব্রিড পদ্ধতিতে ব্যাংকের সভা বন্ধের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের
- আমানতকারীরা অবশ্যই টাকা ফেরত পাবেন, ধৈর্য ধরুন : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর
- ব্যাংক খাতে জালিয়াতির তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
- কালোটাকা সাদা করার পথ বন্ধ হচ্ছে : জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
- পুঁজিবাজারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত হবে : খন্দকার রাশেদ মাকসুদ
- দেশে সহসাই গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়বে না : বিইআরসি চেয়ারম্যান
- গতিহারা অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে চেষ্টা করছে সরকার
- ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের নির্ধারিত সীমা উঠে গেল : বাংলাদেশ ব্যাংক