গোলাম রব্বানী টিটু: শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার বুক চিরে প্রবাহিত ঐতিহ্যবাহী মহারশি নদী আজ হারিয়ে যাচ্ছে দখল ও আবর্জনায়। এক সময় নদীর স্বচ্ছ জলে চলত নৌকা, ভেসে আসত মানুষের জীবিকা। কিন্তু বর্তমানে নদী দখল ও ময়লার স্তূপে পরিণত হয়ে নদীর নাব্যতা কমে গেছে, ফলে বর্ষা মৌসুমে এলাকার মানুষ বারবার ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ছেন।
স্থানীয়রা জানান, নদীর তীরবর্তী এলাকা এক সময় ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। নৌকা ও ট্রলার এসে পণ্য আনাতো। এখন সেই নদীই মাটি ভরাট ও আবর্জনা স্তুপে পরিণত হয়েছে। নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বর্ষার সময়ে পানি নিস্কাশন হচ্ছে না, মাটি ও আবাদি জমি ভেসে যাচ্ছে।
স্থানীয় কৃষক শহীদুর রহমান বলেন, মহারশি নদীকে কেউ দেখছে না। বর্ষার সময় পানি তীর ছাড়িয়ে ঘর-বাগান ভেঙে দিচ্ছে। আমাদের ফসল আর সংসার বাঁচানোর কোনো উপায় নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা রুমা আক্তার জানান, নদীর জায়গা দখল করে বাড়িঘর ও মাটি ভরাট করছে কিছু লোক। এভাবে চললে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য নদী থাকবে না।
জলাশয় সংরক্ষণে কাজ করা সচেতন নাগরিক আল-আমিন বলেন, নদী খনন, দখলমুক্ত ও আবর্জনা ফেলা বন্ধ করে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। সঠিক পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না করলে প্রতি বর্ষায় জনজীবন বিপর্যস্ত হবে।
মহারশি সেতুর উত্তর ও দক্ষিণ অংশে নদীর অর্ধেক জায়গা ভরাট হয়ে গেছে। ফলে বর্ষার সময়ে নদীর পানি ঠিকমতো নিষ্কাশন না হওয়ায় শত শত হেক্টর আবাদি জমি, ঘরবাড়ি ও জনজীবন বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, নদীর নাব্যতা ও দখল সমস্যা নিয়ে জেলা প্রশাসনের সভায় আলোচনা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড যথাসময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। নদী দখলমুক্ত করতে প্রশাসনিক উদ্যোগ নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা আশা প্রকাশ করেছেন যে, দ্রুত পদক্ষেপ নিলে মহারশি নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব এবং ঝিনাইগাতী উপজেলাকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করা যাবে।

