ঢাকা, শুক্রবার   ২৮ জুন ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৪ ১৪৩১

কেউ সমালোচনা করলেই ভীত হতে হবে, বিশ্বাস করি না: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ২৫ জুন ২০২৪  

কেউ সমালোচনা করলেই ভীত হতে হবে, বিশ্বাস করি না: প্রধানমন্ত্রী

কেউ সমালোচনা করলেই ভীত হতে হবে, বিশ্বাস করি না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করি, তখন শিক্ষা ও গবেষণার কাজে আরও বরাদ্দ বাড়াই। ২০১০ থেকে বিনা পয়সায় বই দেওয়া শুরু করি। অনেকে ভেবেছে যে এটা কীভাবে সম্ভব? আমরা সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছি। ছেলেমেয়েরা যাতে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে, দেশ-বিদেশের কর্মমুখী শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, সেদিকে লক্ষ রেখে বহুমুখী শিক্ষার ব্যবস্থা ও উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’ সোমবার (২৪ জুন) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত মাধ্যমিক থেকে স্নাতক (পাস) ও সমমান পর্যায়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

বিজ্ঞান, গবেষণা ও প্রযুক্তিজ্ঞান ছাড়া কোনও দেশ বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তখন কেউ কম্পিউটার ব্যবহার করতো না। টেলিফোন ছিল অ্যানালগ। আমরা টেলিফোন সিস্টেমকে ডিজিটালাইজ করি, কম্পিউটার শিক্ষার জন্য সুযোগ সৃষ্টি করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় দুই-তিনটা কম্পিউটার দিয়ে। ছেলেমেয়েরা যাতে উন্নত শিক্ষা নিতে পারে, তার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। তা ছাড়া আইন পাস করে ১২টা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ শুরু করি।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতীয় শিক্ষানীতি আমরা করে গিয়েছিলাম। কিন্তু ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি আর বিএনপি সেটা বাতিল করে দেয়। ২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করি, তখন শিক্ষা ও গবেষণার কাজে আরও বরাদ্দ বাড়াই। ২০১০ থেকে বিনা পয়সায় বই দেওয়া শুরু করি। অনেকে ভেবেছে যে এটা কীভাবে সম্ভব? আমরা সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছি। ২০১০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ৪৬৪ লাখ ২৯ হাজার ৮৮৩ কোটি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করেছি।’

’৭৫-পরবর্তী যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা গবেষণায় কোনও বরাদ্দ দেয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গবেষণায় আমাদের কোনও বরাদ্দ ছিল না। আমাদের প্রথম বাজেট ছিল অল্প। সেখান থেকেও গবেষণার জন্য টাকা দিই। পরের বাজেটে ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ দিয়েছিলাম। সেটা ছিল কম্পিউটার শিক্ষা ও গবেষণায়। আমাদের শুধু একটা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। আমি আরও কয়েকটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করে দিই। সেই সঙ্গে ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, নভোথিয়েটার প্রতিষ্ঠা, সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট, বায়ু টেকনোলজি ইনস্টিটিউট সব আওয়ামী লীগ সরকার আমলে শুরু করেছিলাম।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত ৩০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ৫৪টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কৃষি, ভেটেরিনারি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, চিকিৎসা, ডিজিটাল, ইসলামি আরবি, অ্যাভিয়েশন, অ্যারোস্পেস, বেসরকারি খাতে ফ্যাশন ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ছেলেমেয়েরা যাতে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে, দেশ-বিদেশের কর্মমুখী শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, সেদিকে লক্ষ রেখে বহুমুখী শিক্ষার ব্যবস্থা ও উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। প্রতিটি উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন করে দিচ্ছি। কারিগরি শিক্ষা কম ছিল, সেটা আমরা বাড়িয়েছি। সরকারি সামাজিক খাতগুলোর শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিই। বাজেটে শিক্ষা খাতেই সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়।’

আত্মমর্যাদাবোধ ও আত্মবিশ্বাস মানুষকে শক্তি দেয় জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কেউ সমালোচনা করলেই ভীত হয়ে যেতে হবে, আমি এটা বিশ্বাস করি না। শিক্ষার্থীদের বলবো, সবসময় এটাই চিন্তা করতে হবে। কে কী বললো, তার জন্য চোখের পানি ফেলে মুখ লুকাতে হবে তা না। নিজের বিশ্বাস থেকে শিখতে হবে। তাহলে এ দেশকে তোমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।

স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করার জন্য অনেক চক্রান্ত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব অতিক্রম করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, আরও এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত। কিছু লোকের সবসময় কোনও কিছু ভালো লাগে না। আর ভালো হতেও দিতে চায় না। তাদের পাত্তা না দিলেও চলবে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, এখন স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন্নাহার, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। 

সর্বশেষ
জনপ্রিয়