ঢাকা, সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৬ ১৪৩১

ধুন্দলে আছে ইনসুলিন

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৫২, ২৭ জুন ২০২৪  

ধুন্দলে আছে ইনসুলিন

ধুন্দলে আছে ইনসুলিন

ধুন্দুল বাঙালীর অত্যন্ত পরিচিত একটি সুস্বাদু সবজি। এর বৈজ্ঞানিক নাম Luffa aegyptiaca। এটি Cucurbitaceae পরিবারের লাফা গণের বর্ষজীবী বিশাল আরোহী বীরুৎ উদ্ভিদ। এর স্থানীয় নাম ধুন্দল।

ধুন্দলগাছের অপরিপক্ক ফল, কচিপাতা এবং ফুলের মুকুল সবজিরূপে খাওয়া হয়। রান্না বা ভাজি সব রকমই এটি খাওয়া যায়। তবে সব্জির থেকেও ধুন্দলের ছোবড়া বেশি বিখ্যাত।

বঙ্গদেশীয় স্নান প্রসাধন সামগ্রীর মধ্যে গা ঘষার জন্যে ধুঁধুঁল ছোবড়ার ব্যবহার সম্ভবতঃ অতি প্রাচীন। পাকা ধুঁধুঁল ফলকে শুকিয়ে ছোবড়া তৈরি হয়। এর মধ্যের সংবাহী শিরাগুলো (ভ্যাস্কুলার বান্ডল), বিশেষ করে কাষ্ঠল জাইলেম তন্তুর জন্যে ধুঁধুঁল ছোবড়া একটু খরখরে (কিন্তু খুব শক্ত নয়, তাই প্রসাধন সামগ্রী হিসেবে উপযুক্ত)। এমনকি এই ছোবড়া রান্না ঘরে বাসন কোসন পরিস্কার করার কাজে ব্যবহার করা হয়।

ধুন্দলের বীজ থেকে ভোজ্য তেল বের করা যায়। তেল মেশানো খোল খাবার হিসাবে খরগোশ এবং ক্যাটফিশকে খাওয়ানো যায় বা এটি সার হিসাবেও ব্যবহৃত হয়। ছায়ামুক্ত পরিবেশে, পর্যাপ্ত আলো জলাবদ্ধতামুক্ত, জৈবসার সমৃদ্ধ মাটিতে ধুন্দুলের জন্মে। ধুন্দল চাষে জমি উঁচু হতে হয়, যাতে পানি জমতে না পারে। দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ ধুন্দল চাষের জন্য উত্তম। মাটি উর্বর এবং সেচ ও নিষ্কাশন সুবিধাযুক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়।

পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পড়ে এমন জমিতে ধুন্দল ভালো হয়। তিন-চারবার গভীর চাষ ও মই দিয়ে জমি আগাছামুক্ত ঝুরঝুরা করে নিতে হয়। ধুন্দল ক্ষেত সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বীজ রোপণের পর ৫০-৬০ দিনের মধ্যে ধুন্দল সংগ্রহ করা যায়। এক হেক্টরে ১২-১৪ মেট্রিক টন পর্যন্ত ফলন হয়ে থাকে। 
বর্তমানে বাংলাদেশসহ জাপান, চীন, রোমানিয়া, ইতালি, তুরস্ক, মিসর ও আর্জেন্টিনার বাসিন্দারা চাষের মাধ্যমে এটির উৎপাদন করে। দক্ষিণ আমেরিকাতেও জনপ্রিয় একটি খাদ্য ধুন্দল। ধুন্দলের দারুণ সব ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে।

ধুন্দলের ঔষধি গুণাগুণ

১। ধুন্দলে আছে ইনসুলিন যা ডায়াবেটিক নিরাময় সহায়তা করে। 
২। মানব দেহে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল এবং মেদ কমাতে সহায়তা করে।
৩। ধুন্দল মানবদেহের হজম ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৪। ধুন্দল জন্ডিস রোগ সারাতে সাহায্য করে।
৫। ধুন্দলে আছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, এবং বি- ভিটামিন যা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৬। ফাইবারসমৃদ্ধ হওয়ায় পেটের নানাবিধ সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
৭। ধুন্দলে ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম এবং ফোলেট, পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকায় হার্ট ভালো রাখে।
৮। ধুন্দলে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ এবং বিটা ক্যারোটিন, যা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।
৯। ধুন্দল ক্যান্সার প্রতিরোধক।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়