নতুন অর্থবছরে সরকারি ব্যয়ে আবারও লাগাম
নিউজ ডেস্ক
![নতুন অর্থবছরে সরকারি ব্যয়ে আবারও লাগাম নতুন অর্থবছরে সরকারি ব্যয়ে আবারও লাগাম](https://www.sherpurnews.com/media/imgAll/2020Aprila/New-Project---2024-04-05T091959307-2407050821.jpg)
নতুন অর্থবছরে সরকারি ব্যয়ে আবারও লাগাম
নতুন অর্থবছরের (২০২৪-২৫) শুরুতেই কয়েকটি খাতের ব্যয়ের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে ফের কৃচ্ছ্রসাধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে অর্থ বিভাগ। এরই অংশ হিসাবে ‘থোক বরাদ্দ তহবিল’-এর অর্থ ব্যয়, সরকারি চাকরিজীবীদের বিদেশ ভ্রমণ, মন্ত্রণালয় ও সংস্থার জন্য যানবাহন ক্রয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বন্ধ থাকবে নতুন স্থাপনা নির্মাণও। অর্থ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ, পেট্রোল, অয়েল লুব্রিকেন্ট ও গ্যাস-জ্বালানির মোট বরাদ্দের ২০ শতাংশ ব্যয়ও স্থগিতের আওতায় আনা হয়েছে।
বুধবার এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে অর্থ বিভাগ। ওই পরিপত্র অনুযায়ী সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, পাবলিক সেক্টর করপোরেশন এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের সংশ্লিষ্ট খাতে টাকা খরচে মিতব্যয়ী হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলায় ২০২৩-২৪, ২০২২-২৩ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকারি ব্যয়ে বিভিন্ন খাতে কৃচ্ছ্রসাধন ঘোষণা করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে কোনো কোনো খাতে শর্তসাপেক্ষে তা শিথিল করা হয়।
চলতি অর্থবছরে কৃচ্ছ্রসাধন কর্মসূচি ঘোষণায় সরকারের সাশ্রয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ খাতে ৮ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা, আবাসিক ও অনাবাসিক স্থাপনায় ৩২ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা, ‘থোক বরাদ্দ তহবিল’ ৬ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা, যানবাহন ক্রয় খাতে ৬ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা, চাকরিজীবীদের বিদেশ ভ্রমণে ২ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা ও জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হবে ৬ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা। কৃচ্ছ্রসাধন প্রসঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, নতুন অর্থবছরের প্রথমার্ধে ব্যয় কম করা হবে এবং শেষদিকে সরকারি ব্যয় বাড়ানো হবে।
জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ এমকে মুজেরী বলেন, ব্যাংকঋণের সুদ বাড়ানোসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশকিছু পদক্ষেপ নিলেও মূল্যস্ফীতির ওপর তেমন প্রভাব পড়েনি। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণ করলে উন্নত বিশ্বে মূল্যস্ফীতিতে এর প্রভাব পড়ে। কিন্তু বাংলাদেশে এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। যে কারণে সরকার অর্থব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধন করছে। যেগুলো অপ্রয়োজনীয় ও বাতিল করা যেতে পারে, এ ধরনের ব্যয় কমানোর চেষ্টা করছে। ব্যয় কমলে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতিকে সাপোর্ট করবে। তবে ঢালাওভাবে না করে অনেক অপ্রয়োজনীয় ও অপচয়মূলক ব্যয় আছে। সেগুলোয় কৃচ্ছ্রসাধন করা গেলে প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হবে না।
গত তিন বছরে করোনার অভিঘাত কাটিয়ে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর সময় ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসাবে দেখা দেয় ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ। এ যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্ব অর্থনীতিতে নানা ধরনের বিরূপ প্রভাব পড়ে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, প্রাকৃতিক গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের মূল্যও বৃদ্ধি পায়। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশের অর্থনীতির ওপর। এরই মধ্যে অস্বাভাবিকভাবে অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে ডলারের মূল্য, যা সর্বোচ্চ বেড়ে এখন ১১৭ টাকায় ঠেকেছে। এর ধাক্কা এসে পড়ে দেশের অর্থনীতির ওপর। বিশেষ করে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধিতে রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। ঋণ ও সুদ পরিশোধ খাতে ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। বেড়ে যায় ভর্তুকির অঙ্কও। যে কারণে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার অর্থ ব্যয়ে কৃচ্ছ সাধনের পথ বেছে নিয়েছে।
সূত্র তে, চলতি অর্থবছরে ভূমি অধিগ্রহণ খাতে ৮ হাজার ৯০৬ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা আছে। এ খাতে বরাদ্দ স্থগিত করে পরিপত্রে বলা হয়, পরিচালনা বাজেটে ভূমি অধিগ্রহণ পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। আর উন্নয়ন খাতে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে সব আনুষ্ঠানিকতা পালন শেষে অনুমোদন নিতে হবে অর্থ বিভাগ থেকে। এছাড়া পরিকল্পনা কমিশনের অনুকূলে ‘বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা’ খাতে সরকারি অংশে সংরক্ষিত টাকা অর্থ বিভাগের আগাম অনুমোদন নিয়ে ব্যয় করতে হবে।
এছাড়া পরিচালনা বাজেটের আওতায় শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট স্থাপনা ছাড়া নতুন আবাসিক, অনাবাসিক ও অন্যান্য ভবন স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ থাকবে। কিন্তু চলমান নির্মাণকাজ ৭০ শতাংশের বেশি হয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে ব্যয় করা যাবে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আবাসিক ও অনাবাসিক স্থাপনায় বরাদ্দ আছে ৩২ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা। পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় আবাসিক ও অনাবাসিক ভবন, অন্যান্য ভবন এবং স্থাপনা খাত থেকে অর্থ ব্যয় স্থগিত হওয়ায় এ অর্থ সাশ্রয় হবে।
নতুন অর্থবছরে থোক বরাদ্দ তহবিল থেকে অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে। এ খাতে বরাদ্দ আছে ৬ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা। তবে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অনুকূলে ‘থোক বরাদ্দ’ হিসাবে থাকা তহবিলে সরকারি অংশে সম্পূর্ণ অর্থ ব্যয় করা যাবে। সেক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের আগাম অনুমোদন থাকতে হবে।
প্রকল্পের আওতায় যানবাহন (মোটরযান, জলযান ও আকাশযান) কেনা বন্ধ থাকবে। পরিচালন বাজেটের আওতায় সরকারি অফিস-আদালতের জন্য নতুন যানবাহন কেনা বন্ধ থাকবে। তবে ১০ বছরের বেশি পুরোনো গাড়ি প্রতিস্থাপন অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে ব্যয় করা যাবে। সূত্রমতে, যানবাহন কেনা বাবদ চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ আছে ৬ হাজার ৯৬৪ কোটি।
ব্যয়ের এ শর্ত মানলে পুরো অর্থ সাশ্রয় হবে।
পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, সরকারি চাকরিজীবীদের অতীতের মতো নতুন (২০২৪-২৫) অর্থবছরেও বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। এ শর্ত পালন হলে বিদেশ ভ্রমণ খাতে ২ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। চলমান বিশ্ব অর্থনীতি ও দেশের ডলার সংকটের কারণে বৈদেশিক রিজার্ভের ওপর চাপ কমানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। এর অংশ হিসাবেই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে সীমিত আকারে দুটি ক্ষেত্রে বিদেশ ভ্রমণ করা যাবে। এর একটি হচ্ছে- বৈদেশিক-সরকার, প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ অর্থায়নে পাওয়া স্কলারশিপ ও ফেলোশিপের আওতাধীন মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়ন। দ্বিতীয়টি হচ্ছে-বৈদেশিক সরকার, প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগীর আমন্ত্রণ ও সম্পূর্ণ অর্থায়নে আয়োজিত বিশেষায়িত পেশাগত প্রশিক্ষণ ও সেমিনারে অংশগ্রহণ।
এছাড়া প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন (পিএসআই) ও ফ্যাক্টরি একসেপটেন্স টেস্ট (পিএটি) আওতায় বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটির জারিকৃত পরিপত্র কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।
জ্বালানি, পেট্রোল, বিদ্যুৎ ও গ্যাস খাত বাবদ ৩ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া আছে। পরিপত্রে বলা হয় বরাদ্দের ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় করতে পারবে। বাকি ২০ শতাংশের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। এতে অর্থ সাশ্রয় হবে ৬ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা।
- টানা দ্বিতীয়বার আন্তর্জাতিক সুপার ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড পেল ওয়ালটন
- জাতীয় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সীমা কমলো
- গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস এর স্বীকৃতি পেলেন ব্যাংকার দিলিপ দাশগুপ্ত
- মিনিস্টার হাই-টেক পার্ক পরিদর্শনে কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার
- দেশ সেরা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালিতে যুক্ত হলো পারটেক্স বেভারেজ
- এবার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে গেল ৫ টন সবজি
- বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে ব্র্যাক ব্যাংকের চুক্তি স্বাক্ষর
- ৭১.৬ শতাংশ জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়াতে চায়
- এক ধাক্কায় ২৫ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম!
- ২০৩০ সালে ১০০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা