ঢাকা, সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৬ ১৪৩১

ময়মনসিংহের দুই শহীদ ফিরোজ ও জাহাঙ্গীর স্মরণে নির্মিত হলো স্মৃতিস্তম্ভ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৪২, ২৮ জুন ২০২৪  

ময়মনসিংহের দুই শহীদ ফিরোজ ও জাহাঙ্গীর স্মরণে নির্মিত হলো স্মৃতিস্তম্ভ

ময়মনসিংহের দুই শহীদ ফিরোজ ও জাহাঙ্গীর স্মরণে নির্মিত হলো স্মৃতিস্তম্ভ

স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র গণআন্দোলনে নিহত ময়মনসিংহের দুই শহীদ ফিরোজ ও জাহাঙ্গীর স্মরণে নির্মিত হলো স্মৃতিস্তম্ভ। প্রায় ৩৩ বছর পর স্মৃতিস্তম্ভটি সেদিনের ঘটনাস্থলের পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে।স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণের জন্য জোরালো দাবি করে আসছিলেন ৯০ এর ছাত্র আন্দোলনের তৎকালীন নেতারা। এটি নির্মাণে ভূমিকা রেখেছে শহীদ ফিরোজ-জাহাঙ্গীর স্মৃতি পরিষদ।

স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী ছাত্র গণআন্দোলনের তৎকালীন ছাত্র নেতারা জানান, ১৯৯০ এর ২৮ নবেম্বর ময়মনসিংহ নগরীর প্রধান সড়ক গাঙিনার পাড় মোড়ে ছাত্র জনতার মিছিল ও সমাবেশ চলছিল। সে সমাবেশ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ছাত্র সংঘের জেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক শেখ ফিরোজ ও জাসদ ছাত্রলীগ নেতা জাহাঙ্গীর। সেসময় তারা পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। ছাত্রনেতারা জানান, দুই শহীদের আত্মদানের পর দেশও স্বৈরাচার মুক্ত হয়।

তৎকালীন ছাত্রনেতারা এ দুই শহীদের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য গাঙিনার পাড় মোড়ের পশ্চিম দিকে মহাকালী গার্লস স্কুলের কোনায় একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। তাই প্রকৌশলী ও ভাস্কর্য শিল্পীদের সঙ্গে আলোচনা করে দুই শহীদের ছবি ও তাদের আত্মদানের ঘটনাসহ স্মৃতিস্তম্ভের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে পুরো নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগে সেখানে একটি অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভের নামে একটি পিলার নির্মাণ করে পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে আর নির্মাণ হয়নি।সে পর্যন্ত মোটা পিলারেই চলতে থাকে শ্রদ্ধা নিবেদন। 

তারা আরো জানান, ১০ বছর আগে তৎকালীন পৌরসভা থেকে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেন পৌর মেয়র ইকরামুল হক টিটু। সেসময় সার্বিক সহায়তার আশ্বাসও দেন তিনি। কিন্তু নানান জটিলতায় সেটিও আর বাস্তবে রূপ নেয়নি। সবশেষে ২০২২ সালে শিল্পী পলাশ সাহার অধীনে সিটি করপোরেশন থেকে আবারো উদ্যোগ নেওয়া হয় স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণের।

এ লক্ষ্যে ওই বছরের ১১ নবেম্বর সিটি করপোরেশন দরপত্র আহ্বান করে। এরপর নির্মাণকাজ শুরু হলেও ধীর গতিতে কাজ করতে থাকে ঠিকাদার। এতে তৎকালীন ছাত্রনেতাদের মাঝে হতাশা ও ক্ষোভ লক্ষ্য করা যায়। পরে তারা সিটি মেয়রের দ্বারস্থ হলে তিনি বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে স্মৃতিস্তম্ভটির নির্মাণকাজ তাড়াতাড়ি শেষ করার তাগিদ দেন। অবশেষে এ বছরের ২৪ শে মে কাজটি শেষ হয়। প্রায় সোয়া ১১ লাখ টাকায় নির্মাণ ব্যয়ে কাজটি সম্পাদন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আজহারুল ইসলাম বলেন, মাস খানেক আগে এটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। দ্রুতই এর উদ্বোধন হবে। 

সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু জানান, সকলের সহযোগিতার কারণেই শেষ পর্যন্ত স্মৃতিস্তম্ভটির নির্মাণ কাজ ভালোভাবে শেষ হয়েছে। তিনি এজন্য তৎকালীন ছাত্রনেতা ও বর্তমানের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। 

৯০ এর ছাত্র আন্দোলনের তৎকালীন জাসদ ছাত্রলীগ নেতা অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু জানান, দীর্ঘ সময়েও এ স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মিত না হওয়ায় তারা হতাশ ছিলেন। অবশেষে বর্তমান সিটি মেয়রের আন্তরিকতায় কাজটি শেষ হয়েছে। এতে তারা খুশি হয়েছেন। আগামী প্রজন্ম এখন এ স্মৃতিস্তম্ভটির মাধ্যমে এ দুই শহীদের আত্মদানের কথা জানতে পারবেও বলে জানান তিনি। 

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়