ঢাকা, বুধবার   ২৬ জুন ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৩ ১৪৩১

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাস রাজি হলেও ইসরায়েলের ভিন্ন সুর

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৪৫, ১৩ জুন ২০২৪  

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাস রাজি হলেও ইসরায়েলের ভিন্ন সুর

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাস রাজি হলেও ইসরায়েলের ভিন্ন সুর

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষিত একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হওয়ার পর ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিক্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস চুক্তিটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে; এ নিয়ে তারা এগোতে চায়। কিন্তু ইসরায়েল এখনো স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে অগ্রগতি হচ্ছে না।

ইসরাইলের সম্মতিক্রমে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া গাজার শান্তিচুক্তি প্রস্তাবে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা বলা হলেও এখনো দেশটির সরকার এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইসরায়েল চুক্তিতে সম্মত নয়।

সম্প্রতি নিরাপত্তা পরিষদেও গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়েছে। এতেও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল এখনো তা মেনে নেয়ার কথা বলছে না। আর হামাস বলছে, তারা স্থায়ী যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা চায়।

এ অবস্থায় বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন কাতারে পৌঁছান। হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় কাতারের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র এবং মিসরও রয়েছে। সেখানে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান বিন জসিম আল থানির সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন। পরে সংবাদ সম্মেলনে এসে কাতারের প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিন বিষয়ে ‘স্থায়ী সমাধানে’র কথা বলেন।

মঙ্গলবার ব্লিংকেন বলেছিলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু চুক্তির বিষয়ে তার অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন। তবে সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদে চুক্তি পাস হওয়ার পরই জাতিসংঘে ইসরায়েলের দূত হামাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। বাইডেনের এ প্রস্তাবের প্রতি আনুষ্ঠানিক কোনো সমর্থনও জানাননি নেতানিয়াহু।

গত ২৭ মে ইসরায়েল যে প্রস্তাব দিয়েছিল, তাতে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে অস্পষ্টতা আছে। এতে বলা হয়েছে, দুই পক্ষ প্রথমে ছয় সপ্তাহে প্রথম ধাপের অস্ত্রবিরতিতে যবে। এ সময় তারা বন্দী বিনিময় করবে। দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হবে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে। কিন্তু এখানে যদি কোনো অবস্থাতেই ইসরাইল যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হয়? হামাস তাই শুরুতেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা দাবি করছে।

ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় পর্যায় বা ধাপটির স্থায়িত্ব হবে ছয় সপ্তাহের। এতে যদি সমঝোতা না হয়, তবে তা সম্প্রসারিত করা হবে। কিন্তু হামাস মনে করছে, এই প্রস্তাবে ইসরায়েলকে যুদ্ধ আবার শুরুর অধিকার দেয়া হয়েছে।

মধ্যস্ততাকারীরা বলছেন, হামাস আরো কয়েকটি সংশোধনী দাবি করছে। তবে সেগুলো খুবই ছোটখাট। সেগুলো সমাধান করতে সমস্যা হবে না। কিন্তু স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়টিই এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বার বার বলে আসছেন, হামাসকে ধ্বংস না করা পর্যন্ত তারা যুদ্ধ বন্ধ করবে না।

তিনি আরো দাবি করেছেন, তাদের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে এই যুদ্ধে তাদের লক্ষ্য পূরণের বিষয়টি অনুমোদন করা রয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে হামাস মনে করছে, ইসরায়েল কেবল যুদ্ধবিরতির প্রথম অংশটুকু বাস্তবায়ন করবে। এর মাধ্যমৈ তারা জীবিত নারী, বয়স্ক এবং অসুস্থ পণবন্দীদের মুক্ত করিয়ে নেবে। এসব বন্দী মুক্ত হলেই তারা পূর্ণ গতিতে আবার হামলা চালাবে। এমনকি তখন হামলার গতি হবে আরো ভয়াবহ।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়