১৮ বছর পর এত বড় ফ্লপ, হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম: আমির খান

8

আমির খান প্রযোজিত ও অভিনীত নতুন ছবি ‘সিতারে জমিন পর’ মুক্তি পেয়েছে গত শুক্রবার। এস প্রসন্নার পরিচালনায় এই ছবিতে আমিরের সঙ্গে অভিনয় করেছেন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ১০ জন শিল্পী। মুম্বাইয়ের সান্তাক্রুজে আমির খান প্রোডাকশনের অফিসে বসে প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি ও কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে এক দীর্ঘ আলাপচারিতায় নিজের কাজ, দর্শন, ব্যর্থতা ও ভালোবাসা নিয়ে অকপটে বললেন আমির খান।

মুম্বাইয়ে ‘সিতারে জমিন পর’ সিনেমার প্রিমিয়ারে আমির খান। এএফপি

আমির জানান, ‘ওদের থেকেই বেশি টেক নিতে হয়েছে আমাকে। ওরা বলত—বড় মানুষের এমন ভুল হতেই পারে। খুব সরল ছিল ওদের দৃষ্টিভঙ্গি। আমি জানি না, ওরা আমার থেকে কী শিখেছে, তবে আমি ওদের থেকে ধৈর্য আর ইতিবাচক মানসিকতা শিখেছি।’

২০০৭ সালে আমির পরিচালিত ‘তারে জমিন পর’ ছবিটি পেয়েছিল তুমুল প্রশংসা। সিতারে জমিন পার সেই ছবির সিকুয়েল হলেও এবার পরিচালনায় নেই আমির। কেন? জবাবে বলেন, ‘আমি তখন বাধ্য হয়েই ছবিটি পরিচালনা করেছিলাম। তবে নিজেকে এখনো কেবল একজন অভিনেতা ভাবি। পরিচালনায় নামলে অভিনয় ছেড়ে দিতে হবে। সেটা আমি চাই না।’

‘সিতারে জমিন পর’ সিনেমায় আমির খান। এক্স থেকে

ছবির কেন্দ্রবিন্দুতে শিশু ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষদের নিয়ে বলিউডে ছবি কম হয় কেন? আমিরের সোজা উত্তর, ‘কারণ নির্মাতারা ভাবেন, এ ধরনের ছবির বাজার নেই। অথচ “তারে জমিন পার”, “চিল্লার পার্টি”, “স্ট্যানলি কা ডাব্বা”র মতো কাজগুলোই মানুষ মনে রেখেছে। আমার বিশ্বাস, ভারতীয় শিশুদের নিজের গল্পে তৈরি ছবি দেখানো দরকার। আমাদের সমাজে রামও আছে, রাবণও। আমি চাই, আমার ছবি রাবণকে বিদায় দিয়ে রামকে জাগিয়ে তুলুক।’

৮ ঘণ্টার কর্মঘণ্টা নিয়ে বর্তমানে বলিউডে পক্ষে-বিপক্ষে চলছে বিতর্ক। এ প্রসঙ্গে আমির বলেন, ‘৮ ঘণ্টা কাজ, ৮ ঘণ্টা ঘুম, ৮ ঘণ্টা নিজের জীবনের জন্য—এটাই হওয়া উচিত। আমি নিজেও একসময় ১৬-১৮ ঘণ্টা কাজ করেছি। কিন্তু অভিনয়কে কখনো কাজ মনে করিনি। ওটা আমার আবেগের জায়গা।’

‘সিতারে জমিন পর’ সিনেমার ট্রেলারে আমির খান। এক্স থেকে

নিজের ছবি নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি কখনো সামাজিক বার্তা দিয়ে ছবি বিচার করি না। আমি নিজেকে দর্শক ভাবি—যদি গল্পটা আমাকে হাসায়, কাঁদায়, হৃদয় ছুঁয়ে যায়, তবে আমি সেটার অংশ হই। যদি বার্তা থাকে, তো ভালো। তবে আমি একজন মনোরঞ্জক, আমার দায়িত্ব আপনাদের মনোরঞ্জন।’

ব্যর্থতা নিয়ে আমির বরাবরই স্পষ্টবাদী। ‘লাল সিং চাড্ডা’ ছবির ব্যর্থতা তাঁকে একেবারে মানসিকভাবে ভেঙে দিয়েছিল বলে জানান। ‘১৮ বছর পর এত বড় একটা ফ্লপ—আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। মানসিক অবসাদে ছিলাম। আমার পরিবার আমাকে ধরে রেখেছে তখন। আম্মি, কিরণ, জুনাইদ, আইরা—ওদের ভালোবাসা আমাকে ফিরিয়ে এনেছে। আমি মজা করে বলি, ছবিটা হিট হলে হয়তো এত ভালোবাসা পেতাম না!’
একই সঙ্গে তাঁর আরেক ব্যর্থ ছবি ‘থাগস অব হিন্দুস্তান’ নিয়েও খোলামেলা বলেন, ‘এই ছবিটা যে চলবে না, আমি আগেই বুঝেছিলাম। ভিক্টর বা আদিত্য চোপড়াকে বলেছিলাম, কিন্তু ওরা আমার কথা শোনেনি। এমনকি ছবির মুক্তির আগে আমি দারুণ ঘুমিয়েছিলাম। কারণ জানতাম, কী আসতে চলেছে!’

আমির খান যেভাবে ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’

   

সাম্প্রতিক সময়ে গৌরীকে নিয়ে আলোচনায় ছিলেন আমির। সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি গৌরীকে লুকিয়ে রাখতে চাইনি। যাকে ভালোবাসি, তাকে সম্মান দিয়ে সামনে আনতে চাই। আমি চরমপন্থী, আর গৌরী শান্ত। আমাদের পার্থক্যই আমাদের টানার কারণ। ও আমার জীবনে শান্তি এনেছে, আর আমি ওর জীবনে রোমাঞ্চ (হাসি)।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here